মোবাইল ব্যবহারকারীদের মাঝে ব্যাটারি নিয়ে ঝামেলা পোহাতে হয়নি এমন লোক হয়ত খুজে পাওয়াটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। ব্যাটারির নান ধরনের সমস্যায় জর্জরিত মোবাইল ব্যবহারকারীরা। কারও চার্য তারাতারি শেষ হয়ে যায়, কারও ব্যাটারি চার্যে দেয়ার সাথে সাথে চার্য ফুল হয়ে যায় আবার একটু পরে মোরাইল অফ, কারও সেট হঠাৎ গরম অতঃপর শাটডাউন। এইরকম নানা সমস্যায় আমরা ভূগছি।
আমরা কিন্তু একটু সতর্ক হলেই এই সমস্ত সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারি। আমি আপনাদের সামনে সহজ কিছু টিপস তুলে ধরছি যা আপনাদের মোবাইল ব্যাটারির জীবনকে দির্ঘায়ীত করবে এবং প্রয়েজনের সময় আপনাকে সবার সাথে সংযুক্ত রাখবে বলে আশা করি
১. ব্লু-টুথ, ইনফ্রারেড এবং ওয়াইফাই বন্ধ রাখুন : ডাটা প্রসেসিং এর পর আমরা অনেকেই আমাদের ব্ল-টুথ অথবা ইনফ্রারেড বন্ধ করতে ভূলে যাই। এই কাজটি আমাদের মোবাইলের ব্যাটারি থেকে অনবরত পাওয়ার লস করে থাকে। তাই এখন থেক মনে করে ডাটা পাসিং এর পর ইনফ্রারেড এবং ব্লু-টুথ বন্ধ করে রাখুন।
২. প্রয়োজন অনুযায়ী কমিয়ে নিন আপনার মোবাইল ডিসপ্লের ব্রাইটনেস : আপনার মোবাইলে যদি ডিসপ্লের ব্রাইটনেস কন্ট্রোল করার অপশনটি থেকে থাকে তাহলে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী কমিয়ে নিন আপনার মোবাইল ডিসপ্লের ব্রাইটনেস। নকিয়ার স্মার্টফোন গুলোতে লাইট সেন্সর ব্যবহার করা হয় যাতে এক এক ধরনের আলোতে ব্রাইটনেস এর পরিবর্তন হতে পারে। তবে আপনার মোবাইলে যদি অপশনটি থেকে থাকে তাহলে আপনি আপনার মোবাইলের ব্রাইটনেস মিডিয়াম করে রাখতে পারেন যা আপনার ব্যাটারির অনেক চার্য বাচাবে। আর যখন আপনি বাড়ির বাইরে আছেন এবং আপনার মোবাইল চার্য ক্ষুধায় ভূগছে, হাতের কাছে চার্যারটিও নেই তখন আপনি আপনার মোবাইলের ব্রাইটনেস মিনিমাম করে রাখতে পারেন। আর একটি ছোট্ট টিপস্ হল আপনি আপনার মোবাইল এর কলিং অপশনের ব্যাকলাইট এর টাইম কমিয়েও রাখতে পারেন।
৩. যতটা সম্ভব ভাইব্রেশন বন্ধ রাখুন : এই টিপস্ যখন আপনি কোন কনফারেন্স রুমে, হসপিটালে অথবা ক্লাসরুমে থাকবেন সেই সময়ের জন্য প্রযোজ্য নয়। কারণ আপনাকে তখন মোবাইল সাইলেন্ট মোডে রাখতে হয়। তবে একটা জিনিস করা যায়, যেহেতু আপনি ক্লাসরুমে কোন কল রিসিভ করতে পারবেন ই না, তাই মোবাইল এর রিংটোন ও ভাইব্রেটর দুটোই অফ রাখতে পারেন। পরে দেখে নিতে পারবেন। ( এই ক্ষেত্রে একটা ভয় : প্রেমিকার ফোন আসলে আপনি না ধরায় রেগেমেগে ব্রেকআপ ও হয়ে যেতে পারে )। অন্নান্য সময় আপনার মোবাইলের রিংটোনের লেভেল কমিয়ে রাখতে পারেন যা কিছুটা হলেও আপনার ব্যাটারি সঞ্চয় করবে।
৪. নেটসার্ফিং থেকে বিরত থাকুন : এজ সার্ভিসের কল্যানে আমরা সবাই কানেক্টেড। কিন্তু আপনার মোবাইল ব্যাটারির প্রান যখন যায় যায় তখন নেট সার্ফিং থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। নতুবা এক ঘন্টা আগেই আপনি শাটঅফ হয়ে যেতে পারেন। তাছারা গেমস, ভিডিও ও এমপিথ্রি থেকে বিরত থাকুন।
৫. যেখানে নেটওয়ার্ক সিগনাল নেই সেখানে মোবাইল অফ রাখুন : যে এলাকায় আপনার ব্যবহার করা মোবাইল অপারেটর এর নেটওয়ার্ক সেবা পৌছায়নি সে সমস্ত এলাকায় আপনি আপনি আপনার মোবাইল অফ রাখলেই অন থাকতে পারবেন! একটু অবাক হলেন? হুম, বুঝিয়ে বলি....আপনি আপনার ইউনিভার্সিটির আন্ডারগ্রাউন্ড স্টাডি এরিয়াতে বসে স্টাডি করছেন কিন্তু সেখানে কোন মোবাইলের সিগনালই পৌছাতে পারেনা। তখন আপনার মোবাইল অনবরত আপনার মোবাইল অপারেটর এর সিগনাল খুজতে থাকে যা অনেক দ্রুত আপনার ব্রাটারি শেষ করে দিতে পারে। এই সময় গুলোতে আপনি আপনার মোবাইলকে খানিকটা সময়ের জন্য বিশ্রামে রাখতে পারেন।
৬. চার্জিং এবং ডিসচার্জিং : এই ব্যাপারটা আমদের অনেকর কাছেই ঘোলাটে। আসলে এই ব্যাপারটা জানার চেষ্টাই করিনা আমরা। আমরা অনেকেই যখনই পারি তখনই ব্যাটারি চার্জ করি। আবার অনেকে অর্ধেক ব্যাটারি ব্যবহার হয়ে যাওয়ার পর চার্য করি। আসলে মোবাইলের লম্বা জীবনের জন্য এই দুটো কাজের কোনটাই ঠিক নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে তখনই ব্যাটারি চার্য করা উচিৎ যখন ব্যাটারি লেভেল অনেক নিচে নেমে আসে। আর ব্যাটারির লম্বা জীবন নিশ্চিত করতে সম্তাহ অথবা মাসে অন্তত একবার ফুল ব্যাটারি ব্যবহারের পর চার্য করা উচিত।
৭. ব্যাটারি মেইনটেইনেন্স : আপনার মোবাইলের ব্যাটারিকে আদ্রতা ও তাপ থেকে সাবধানে রাখুন। বর্ষাকালে আপনার মেবাইল ব্যাটারির বিশষ যত্ন নিন। যদি অনেক দিন যাবৎ দেশের বাইরে থাকেন অথবা কাজে ব্যস্ত থাকার কারনে মোবাইল ব্যবহার করতে না পারেন তাহলে মোবাইল ব্যাটারিটি খুলে কোন শুকনো জায়গায় সাবধানে রেখে দিন।
এই টিপস গুলো মোটামুটি মেনে চললেও আমাদের মোবাইল ব্যাটারি দীর্ঘ জীবন লাভ করবে বলে আমার ধারনা............
No comments:
Write comments